মুলতানি মাটির ১০টি কার্যকারী উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
মুলতানি মাটি হলো বিশেষ একধরণের কাদা মাটি যা পৃথিবীর সব জায়গায় পাওয়া যায় না। কিছু কিছু জায়গায় প্রাকৃতিক ভাবেই সৃষ্টি হয় এই মাটি। বৈজ্ঞানিকভাবে মুলতানি মাটি ক্যালসিয়াম বেনটোনাইট নামে পরিচিত। এই পোস্টটিতে আমরা মুলতানি মাটি নিয়ে আলোচনা করবেন।
এই খনিজ গুলোর উপস্থিতির কারণেই এটি মূল্যবান পদার্থ হিসেবে পরিচিত লাভ করে। এর ব্যবহারে মিলবে অনেক উপকারিতা তাই আপনাকে জানতে হবে এর সঠিক ব্যবহার। আমরা এখন আলোচনা করবো এর উপকারিতা এবং ব্যবহার বিধি নিয়ে।
মুলতানি মাটি কিভাবে মাখলে উপকার হয়
মুলতানি মাটি একটি প্রাকৃতিক মাটি যা ত্বকের যত্নে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কার্যকরী। মুলতানি মাটি মাখার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, প্রতিটি পদ্ধতির বিশেষ উপকারিতা আছে। নিচে কিছু সাধারণ পদ্ধতি এবং তাদের ৪টি উপকারিতা দেওয়া হলো।
১. মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল
মুখ থেকে অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশই ভরসা। কিন্তু ফেসওয়াশ সাময়িক রেহাই দেয় চিটচিটে ভাব থেকে। দীর্ঘ সময়ের জন্য নিস্তার মিলবে না তৈলাক্ত ভাব থেকে। এর জন্য আপনাকে ঘরোয়া টোটকার সাহায্য নিতে হবে। বাজার চলতি ফেসওয়াশ, ফেসপ্যাকের বদলে মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন। মুলতানি মাটি এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা ত্বককে অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করার পাশাপাশি সিবাম নিঃসরণকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ব্রণর সমস্যা কমায়।
উপকরণ
- টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- পরিমাণমতো গোলাপ জল
পদ্ধতি
- মুলতানি মাটির সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এটি মুখে ও গলায় প্রয়োগ করুন।
- ১৫-২০ মিনিট বা শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা
- ত্বককে সতেজ ও কোমল করে।
- ব্রণের দাগ হালকা করে।
- ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমায়।
- মুলতানি মাটি ও দুধ
২. মুলতানি মাটি ও দুধ
ব্রণ ও দাগ থেকে মুক্তি পেতে মুলতানি মাটির সাথে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য 3-4 চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে তাতে এক চামচ মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার মুখে লাগিয়ে রাখুন 15 মিনিট। দুধ স্বাস্থ্যকর আবার ত্বকের পক্ষে পুষ্টিকর। কারণ, এতে আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং আরও অনেক পুষ্টি উপাদান ৷ স্বাস্থ্যের পাশাপাশি দুধ ত্বকের জন্যও খুব ভালো বলে মনে করা হয় । কাঁচা দুধ ত্বকে নানাভাবে ব্যবহার করা যায় । জেনে নিন কীভাবে ব্যবহার করবেন কাঁচা দুধ।
উপকরণ
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- প্রয়োজনমতো কাঁচা দুধ
পদ্ধতি
- মুলতানি মাটির সাথে দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- মুখে ও গলায় প্রয়োগ করুন।
- ১৫-২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা:
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
- ত্বক মসৃণ করে।
- ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে।
৩. মুলতানি মাটি ও মধু
কাঁচা দুধের সঙ্গে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে । এটি মুখের ট্যানিং থেকে মুক্তি দেয় । এর জন্য একটি পাত্রে 4-5 চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন । এবার তুলোর সাহায্যে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন । এর পর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।
উপকরণ
- টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- টেবিল চামচ মধু
- পরিমাণমতো পানি
পদ্ধতি
- মুলতানি মাটি ও মধু একসাথে মিশিয়ে প্রয়োজনমতো পানি যোগ করে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- মুখে প্রয়োগ করুন।
- ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা
- ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।
- ত্বকের বলিরেখা হ্রাস করে।
- ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে।
- মুলতানি মাটি ও লেবুর রস
৪. মুলতানি মাটি ও লেবুর রস
মুলতানি মাটি ও লেবুর রসের সংমিশ্রণ ত্বকের যত্নে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতিটি সহজেই ঘরে বসে করা যায় এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
উপকরণ
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
- পরিমাণমতো পানি
পদ্ধতি
- মুলতানি মাটির সাথে লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এটি মুখে ও গলায় প্রয়োগ করুন।
- একটি পাত্রে মুলতানি মাটি নিন।
- এর সাথে লেবুর রস যোগ করুন।
- একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করার জন্য প্রয়োজনমতো পানি মেশান।
- এই পেস্টটি মুখে ও গলায় সমানভাবে প্রয়োগ করুন, চোখের চারপাশ এড়িয়ে চলুন।
- ১৫-২০ মিনিট বা মাটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং একটি নরম তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুছে ফেলুন।
- মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, কারণ লেবুর রস ত্বক কিছুটা শুষ্ক করে দিতে পারে।
উপকারিতা
- মুলতানি মাটি এবং লেবুর রস ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, যা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।
- লেবুর রস ত্বকের দাগ দূর করে এবং ত্বক উজ্জ্বল করে।
- অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে।
- নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগ ও ব্রণের চিহ্ন কমে যায়।
- এই প্যাকটি ত্বকের পোরস ছোট করতে সাহায্য করে।
মুলতানি মাটি মাখার উপযুক্ত সময় হলো রাতে, যাতে ত্বক সারারাত ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারে এবং পুষ্টি পায়। তবে, যাদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল, তাদের মুলতানি মাটি ব্যবহার করার আগে একটু পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
মুলতানি মাটির উপকারিতা
মুলতানি মাটি ত্বকের হাল ফেরাতে যে বেশ কার্যকরী ভূমিকা নেয়, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে আয়ুর্বেদেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটির ব্যবহার চোখে পড়ে। তাই তো এর কদর কখনও কমেনি।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মুলতানি মাটি ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করতে এবং ত্বকের উপরে জমে থাকা মৃত কোষের স্তর সরিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক জেল্লা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মুলতানি মাটি, যা "ফুলারস আর্থ" নামেও পরিচিত, একটি প্রাকৃতিক মাটি যা সৌন্দর্য ও ত্বকের যত্নে বহুল ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে প্রদাহ কমাতে এবং অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণেও সিদ্ধহস্ত। তাই তো এই গরমে ত্বকের পরিচর্যায় এই প্রাকৃতিক উপাদানটির উপর ভরসা রাখলে একাধিক উপকার পাবেন। নিম্নে মুলতানি মাটির কিছু উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
- ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করেঃ মুলতানি মাটি ত্বকের ময়লা ও অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, যা ত্বককে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে তোলে।
- ব্রণ ও অ্যাকনের চিকিৎসাঃ এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ব্রণ ও অ্যাকনের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের টোন সমান করেঃ নিয়মিত মুলতানি মাটি ব্যবহার ত্বকের টোন সমান করে এবং ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে।
- রোদে পোড়া ত্বকের যত্নঃ মুলতানি মাটি রোদে পোড়া ত্বকের শীতলতা প্রদান করে এবং ত্বকের জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের ছিদ্র ছোট করেঃ এটি ত্বকের ছিদ্রগুলিকে ছোট করে এবং ত্বকের টেক্সচার উন্নত করে।
- ত্বকের মৃত কোষ দূর করেঃ মুলতানি মাটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, যা ত্বকের পুনর্জন্মে সহায়ক।
- ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখেঃ মুলতানি মাটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে।
ব্যবহার বিধি
- মুখের মাস্কঃ মুলতানি মাটি পানি, গোলাপ জল, বা দুধের সাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে মুখে প্রয়োগ করা যায়।
- চুলের যত্নঃ এটি চুল পরিষ্কার করতে এবং স্কাল্পের অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। মুলতানি মাটি চুলে প্রয়োগ করে কিছুক্ষণ রেখে তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতা
- শুষ্ক ত্বকঃ যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, তারা মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
- প্রতিক্রিয়াঃ প্রথমবার ব্যবহারের আগে একটি ছোট স্থানে প্যাচ টেস্ট করুন, যাতে কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা বোঝা যায়।
মুলতানি মাটির অপকারিতা
মুলতানি মাটির বিশেষ কোনো অপকারিতা না থাকলেও এটি ব্যবহার এর সঠিক নিয়ম না জানার কারণে মানুষ ত্বকের নানা ক্ষতি সাধন করে ফেলেন। প্রতিটি ত্বক যেমন ভিন্ন তাই এর ব্যবহার বিধি ও প্রতিটি ত্বকের জন্যই ভিন্ন। যাদের অত্যন্ত শুষ্ক ত্বক তারা প্রতিদিন মুলতানি মাটি ব্যবহার করলে তা ত্বককে আরো শুষ্ক করে দিবে এবং ব্রণ এর উপদ্রব ও বাড়াতে পারে।
তাই সপ্তাহে দুই দিন এই মাটি ব্যবহার করাই যথেষ্ট। প্রতিটি প্রাকৃতিক উপাদানই কিছু না কিছু গুনাগুন দিয়ে ভরপুর হয়ে আছে। এর সঠিক এবং নিয়মিত ব্যবহার আপনার জন্য বয়ে নিয়ে আসতে পারে নানান উপকারিতা। মুলতানি মাটি সাধারণত নিরাপদ ও প্রাকৃতিক একটি উপাদান, তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহারে কিছু অপকারিতা হতে পারে। নিম্নে মুলতানি মাটির কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
- ত্বক শুষ্ক হওয়াঃ মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, যা ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে পারে। শুষ্ক ত্বকের মানুষদের জন্য এটি অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণ হতে পারে।
- অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতাঃ কিছু মানুষের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহারে অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা হতে পারে। এটি ব্যবহারের আগে একটি ছোট স্থানে প্যাচ টেস্ট করা উচিত।
- ত্বক জ্বালাপোড়া বা লালচে হওয়াঃ মুলতানি মাটি ব্যবহারে কিছু মানুষের ত্বকে জ্বালাপোড়া বা লালচে হওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে।
- চোখে ঢুকে যাওয়াঃ মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন এটি চোখে না ঢুকে। যদি চোখে ঢুকে যায়, তাহলে তৎক্ষণাৎ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- প্রাকৃতিক তেল হ্রাসঃ ত্বকের প্রাকৃতিক তেল বেশিমাত্রায় শোষিত হলে ত্বকের সুরক্ষা কমে যেতে পারে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
সতর্কতা
- প্যাচ টেস্টঃ প্রথমবার ব্যবহারের আগে একটি ছোট স্থানে প্যাচ টেস্ট করুন, যাতে কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা বোঝা যায়।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়, তবে মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
- নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারঃ নিয়মিত ব্যবহারের পরিবর্তে মাঝে মাঝে ব্যবহার করা উচিত, বিশেষত যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল বা শুষ্ক হয়।
মুলতানি মাটি সাধারণত ত্বকের জন্য উপকারী, তবে সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপকারিতা উপভোগ করতে পারেন এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারেন।
মুলতানি মাটি ব্যবহারের নিয়ম
মুলতানি মাটি, যা ফুলারস আর্থ নামেও পরিচিত, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ত্বকের যত্নে বেশ জনপ্রিয়। মুলতানি মাটি ত্বকের ব্রণ দূর করতে এবং রোদে পুড়া কালচে ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এই উপকারী প্রাকৃতিক প্রসাধনী ত্বকের যত্নের পাশাপাশি চুলেও ব্যবহার করা যায়।আজকে আমরা মুলতানি মাটির বহুমুখী ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব আশা করি সকলে মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করা
মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করা খুবই সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়। এটি ত্বকের সাথে মুদ্রা এবং অবশিষ্ট তেল নিষ্কাশন করে এবং ত্বকে জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করার পদক্ষেপগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল।
- একটি প্রাকৃতিক মুলতানি মাটি নিন। আপনি যদি প্রাকৃতিক মুলতানি মাটি না পান, তবে মাটি মূল্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অথবা মুদ্রা না থাকা নিশ্চিত করুন।
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- মুলতানি মাটির সাথে প্রয়োজনীয় পরিমাণ গোলাপ জল, দুধ বা সাধারণ পানি মেশান।
- একটি পেস্ট তৈরি করুন যা মুখে সহজে প্রয়োগ করা যায়।
মুখ পরিষ্কার করা
মুলতানি মাটি ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করা সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিষ্কাশন করে, মুদ্রা মুছে ফেলে এবং ত্বকের অবশিষ্ট যত্ন নেওয়ার সাহায্য করে। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি মুলতানি মাটি ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন।
- মুলতানি মাটি ব্যবহারের আগে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- মেকআপ বা ধুলা-ময়লা দূর করতে ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।
- একটি প্যানে মুলতানি মাটি নিন এবং প্রয়োজন মতো পানি যোগ করুন। মিশ্রণ করে মুদ্রা বানাতে সাহায্য করা।
- মুলতানি মাটি হাতে নিন এবং সাবধানে মুখে প্রয়োগ করুন। এটি মুখে সামান্য মুদ্রা আবদ্ধ করুন, প্রধানত যে স্থানে অতিরিক্ত তেল আছে।
- মুলতানি মাটি মুখ প্রয়োগের পর মুখ ভালোভাবে সাবান এবং পানি দিয়ে ধুয়ে নিন যাতে মুদ্রা ও মাটি অবশিষ্ট না থাকে। এরপর একটি শুকনো তোলার কাপে মুখ পোঁছানো যেতে পারে।
মুলতানি মাটি প্রয়োগ করা
মুলতানি মাটি একটি প্রাচীন প্রাকৃতিক উপাদান, যা বিভিন্ন তরল অবস্থায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে যাতে সমস্ত তরলের অবস্থায় ব্যবহার করা যায়। এটি স্থানীয় বাজারে সহজলভ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে সহায়ক। মুলতানি মাটির ব্যবহারের কিছু উদাহরণ নিম্নলিখিত হতে পারে।
- মুলতানি মাটি একটি অত্যন্ত প্রকৃতিসহজ চেহারা পরিষ্কারণ পদ্ধতি। এর পেস্ট চেহারার মুদ্রা, মুখের অতিরিক্ত তেল সরানো এবং ত্বকের অতিরিক্ত মোম নিষ্কাশনে সাহায্য করে।
- মুলতানি মাটি চুলে একটি প্রাকৃতিক শাম্পু বা কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি চুলের তালি স্বাস্থ্য বাড়াতে এবং স্ক্যাল্পের সমস্যাগুলি সমাধানে সাহায্য করতে পারে।
- মুলতানি মাটির পেস্ট মুখে প্রয়োগ করা যেতে পারে যেন তা ত্বকের রুখ, চামড়া পরিষ্কার করে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিষ্কাশন করে।
- মুলতানি মাটির পেস্ট চর্মরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এবং চর্মের অতিরিক্ত তেল নিষ্কাশন করে।
- মুলতানি মাটির পেস্টটি মুখে ও গলায় সমানভাবে প্রয়োগ করুন।
- চোখ এবং ঠোঁটের আশেপাশের সংবেদনশীল স্থানগুলি এড়িয়ে চলুন।
পেস্টটি শুকাতে দেওয়া
মুলতানি মাটি পেস্ট শুকাতে দেওয়া খুবই সহজ এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতি। এটি মুখে প্রয়োগ করা, ত্বকের সাথে পরিষ্কার করা এবং চুলে প্রয়োগ করা যেমন অনেক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। নিচে মুলতানি মাটি পেস্টটি শুকাতে দেওয়ার একটি সহজ পদ্ধতি দেওয়া হলো।
- প্রথমে একটি প্যাকেট বা প্রয়োজন মতো মুলতানি মাটি নিন।
- মুলতানি মাটি নিয়ে একটি পাত্রে নিম্নলিখিত পরিমাণে পানি যোগ করুন।
- পানি যোগ করার পর মুলতানি মাটি এবং পানি ভালোভাবে মিশানো যায়। এটি একটি মোমুক্ত পেস্টের মতো হতে হবে।
- একটি ছোট্ট প্যানে পেস্টটি রাখুন এবং তাকে ভালোভাবে সূষণ করুন। পেস্টটি বায়ুর যোগান সাহায্যে বা স্থানীয় একটি ফ্যানের সাহায্যে শুকাতে দিতে পারেন।
- পেস্টটি সংরক্ষণ করার জন্য একটি প্যানে বা সীলযুক্ত প্রায় কেজিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- প্রায় ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন বা যতক্ষণ না পেস্টটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।
- পেস্টটি শুকিয়ে গেলে মুখে টান অনুভব করতে পারেন।
মুখ ধোয়া
মুলতানি মাটি মুখ ধোয়া একটি প্রাকৃতিক উপায় যা ত্বকের মুদ্রা, ত্বকের তালির স্বাস্থ্য, এবং ত্বকের ত্বকের অতিরিক্ত তেল সরানোর জন্য সাহায্য করতে পারে। এটি সহজেই তৈরি করা যায় এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। মুলতানি মাটি মুখ ধোয়ার পদ্ধতিটি নিম্নলিখিত হতে পারে।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- ধোয়ার সময় হালকা হাতের চাপে মুখ ম্যাসাজ করতে পারেন যাতে মাটি সহজে উঠে যায়।
- একটি পাত্রে মুলতানি মাটি নিন। এর পরে প্রয়োজন মতো পানি যোগ করুন যাতে একটি মোমুক্ত পেস্ট তৈরি হয়।
- চাইলে হালকা লেবুর রস মিশানো মাটির মিশ্রণে যোগ করুন। লেবুর রস চালুকারিতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিষ্কাশন করে।
- দই মুখের জন্য উপকারী হতে পারে এবং চুলের মধ্যে তালির স্বাস্থ্য বাড়াতে পারে। চাইলে মুলতানি মাটি মিশ্রণে ১-২ চা চামচ দই যোগ করুন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
মুলতানি মাটি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা অত্যন্ত সাহায্যকারী হতে পারে চুলের যত্নে এবং চুলের স্বাস্থ্যকে সংরক্ষণে। ময়েশ্চারাইজারগুলি সাধারণত চুলের দুর্বলতা, রুখার সমস্যা, স্ক্যাল্প সন্ধি, চুলের ঝিল্লির সুষম করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই প্রোডাক্টগুলি চুলের মধ্যে প্রোটিন ও পুরোয়া উপাদান সরবরাহ করে এবং চুল আরও মসৃণ, নরম এবং স্বাস্থ্যকর করে।
- মুখ ধোয়ার পর ত্বক শুষ্ক হতে পারে, তাই একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- চুলের যত্নে মুলতানি মাটি ব্যবহারের নিয়ম
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে প্রথমে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন শ্যাম্পু ব্যবহার করে। চুলের ভালো ফলের জন্য একটি কন্ডিশনার বা হেয়ার সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে।
- মুলতানি মাটি ময়েশ্চারাইজার নিন এবং এটি চুলের মধ্যে ম্যাসাজ করুন। মাটিটি ভালোভাবে চুলের স্ক্যাল্পে প্রয়োগ করুন এবং স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
- মুলতানি মাটি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগের পর চুলে সাধারণত ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এটি চুলের সাথে ঠিকমতো যুগ্মন করতে দিন।
- মুলতানি মাটি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগের পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চুলের স্ক্যাল্পে মাটিটি থাকলে অতিরিক্ত মাটি পরিষ্কার করা যায়।
- চুলের সাথে যেমন অধিক মোমুক্ত হবে, তেমন আপনি চুল স্টাইল করতে পারেন।
মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করা
মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করা খুবই সহজ এবং প্রাকৃতিক। এটি চুলের সম্পৃক্ত সমস্যাগুলি সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। নিচে মুলতানি মাটির পেস্ট তৈরি করার একটি সাধারণ পদ্ধতি দেওয়া হলো।
- ৪-৫ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- এর সাথে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- একটি পাত্রে নিম্নলিখিত পরিমাণে মুলতানি মাটি নিন। পরিমাণটি চুলের দৈর্ঘ্য এবং মাথার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বেশি বা কম হতে পারে।
- একটি সাধারণ মিশ্রণে, মুলতানি মাটি এবং পানি মিশিয়ে নিন যাতে একটি মোমুক্ত পেস্ট তৈরি হয়।
- মিশ্রণটি ভালোভাবে আচ্ছাদিত হওয়া উচিত, তবে এটি অতিরিক্ত পানি ছাড়াও খুব ঘন না হয়ে যাওয়া উচিত।
- চাইলে মুলতানি মাটি ও পানির মিশ্রণে ১-২ চা চামচ লেবুর রস যোগ করুন। লেবুর রস চুলের দীপ্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- মুলতানি মাটির পেস্টটি হাতের বাম দিকে নেন এবং এটি চুলের সম্পৃক্ত অংশে ভালোভাবে প্রয়োগ করুন।
চুল পরিষ্কার করা
- চুল ধোয়ার আগে শুকনো চুলে মুলতানি মাটির পেস্ট প্রয়োগ করুন।
- চুলের গোড়ায় ও স্ক্যাল্পে ভালোভাবে প্রয়োগ করুন।
- যদি মনে হয় চুল পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি, তাহলে হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ধুয়ার সময় হালকা হাতের চাপে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করুন যাতে মাটি ভালোভাবে উঠে যায়।
- চুল পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ধুয়ে ফেলুন।
শুকাতে দেওয়া
মুলতানি মাটি শুকাতে দেওয়া খুবই সহজ এবং সাধারণ পদ্ধতি।মুলতানি মাটি শুকিয়ে নিলে এটি বিভিন্ন তরল অবস্থায় ব্যবহার করা যায়, যেমন মুখে প্রয়োগ, চুলে মাস্ক তৈরি করা, ত্বকে প্রয়োগ করা ইত্যাদি। এটি সাধারণত প্রাকৃতিক ত্বকের যত্ন নিতে ব্যবহৃত হয়। যেমন, এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিষ্কাশন করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের গ্লোইং উন্নত করে। নিচে একটি সাধারণ পদ্ধতি দেওয়া হলো।
- প্রথমে একটি প্যাকেট বা প্রয়োজন মতো মুলতানি মাটি নিন।
- মুলতানি মাটি একটি প্যানে নিয়ে সমান্তরাল ভাবে ছাড়িয়ে দিন। এটি একটি প্যানে একত্রিত হবার পর প্রায় ১৫-২০ মিনিট সময় দিতে পারে।
- মুলতানি মাটি সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে নিন। এটি শুকিয়ে পরিমাণ ছাড়া যে মোটামুটি ১৫-২০ মিনিট সময় নিতে পারে।
- মুলতানি মাটি শুকানোর পরে এটি একটি প্যান বা সীলযুক্ত প্রায় কেজিতে সংরক্ষণ করা উচিত।
চুল ধোয়া
মুলতানি মাটি চুল ধোয়ার জন্য একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী উপাদান। এটি চুলের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, চুল পরিষ্কার করে এবং স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। মুলতানি মাটি ব্যবহার করে চুল ধোয়ার নিয়মাবলী নিম্নে দেওয়া হলো।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ধুয়ার সময় হালকা হাতের চাপে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করুন যাতে মাটি ভালোভাবে উঠে যায়।
- শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন।
- চুল পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতা
মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যাতে এর ব্যবহার থেকে কোনও অপ্রীতিকর প্রতিক্রিয়া বা সমস্যা না হয়। নিম্নে মুলতানি মাটি ব্যবহারের কিছু সতর্কতা উল্লেখ করা হলো।
- প্যাচ টেস্টঃ প্রথমবার ব্যবহারের আগে একটি ছোট স্থানে প্যাচ টেস্ট করুন, যাতে কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা বোঝা যায়।
- প্রয়োজনীয়তা অনুসারে ব্যবহারঃ অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করা যথেষ্ট।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ ত্বক শুষ্ক হলে মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- চোখ এবং ঠোঁটের আশেপাশে ব্যবহার করবেন নাঃ মুলতানি মাটি মুখে প্রয়োগ করার সময় চোখ এবং ঠোঁটের সংবেদনশীল স্থানগুলি এড়িয়ে চলুন। এটি চোখে গেলে তৎক্ষণাৎ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- শুষ্ক ত্বক হলে সতর্ক থাকুনঃ মুলতানি মাটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, যা শুষ্ক ত্বকের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনার ত্বক খুব শুষ্ক হয়, তবে এটি ব্যবহারের পর অবশ্যই একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- আর্দ্রতা বজায় রাখুনঃ মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই ব্যবহারের পর অবশ্যই ত্বককে আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- অতিরিক্ত ব্যবহারের থেকে বিরত থাকুনঃ মুলতানি মাটি অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে যেতে পারে। সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
- চোখ এবং ঠোঁটের আশেপাশে ব্যবহার করবেন নাঃ মুলতানি মাটি মুখে প্রয়োগ করার সময় চোখ এবং ঠোঁটের সংবেদনশীল স্থানগুলি এড়িয়ে চলুন। এটি চোখে গেলে তৎক্ষণাৎ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মুলতানি মাটি কি প্রতিদিন মুখে ব্যবহার করা যাবে
মুলতানি মাটি এমন একটি মাটি, যেটি পৃথিবীর সব জায়গায় পাওয়া যায় না। কিছু কিছু জায়গা আছে যে জায়গায় মুলতানি মাটি সৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক ভাবে। ঠিক সেরকম একটা অঞ্চল যেটার নাম ছিল মুলতান শহর, যেটি পাকিস্তানে অবস্থিত। মুলতান শহরে এই মাটির সন্ধান সর্বপ্রথম পাওয়া গিয়েছিল বলেই এই নামটা সে শহরের নাম অনুসারে মুলতানি মাটি করা হয়েছে।
বহুকাল ধরেই রূপচর্চার অন্যতম নির্ভরযোগ্য উপাদান হিসেবে মুলতানি মাটির ওপর ভরসা করে আসছে মানুষ। এছাড়া ত্বকের কালচে দাগ ও ব্রণ দূর করতে মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের ওপরের অংশে জমে থাকা তেল, ময়লা এবং টক্সিন দূর করতে মুলতানি মাটির তুলনা নেই। চলুন আজ জেনে নেবো মুলতানি মাটি ব্যবহারের কয়েকটি উপায়
- ত্বকের ধরনঃ যদি আপনার ত্বক শুষ্ক বা সংবেদনশীল হয়, তবে প্রতিদিন মুলতানি মাটি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এটি ত্বককে আরও শুষ্ক এবং সংবেদনশীল করতে পারে।
- প্রয়োগের সময়ঃ যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয়, তবে আপনি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন ব্যবহার করার ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল কমে যেতে পারে, যা ত্বকের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত ব্যবহারঃ মুলতানি মাটি অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ স্তরের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
মুলতানি মাটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, ছিদ্রগুলো পরিষ্কার রাখে এবং ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে। এখানে মুলতানি মাটি ব্যবহার করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কিছু ফেস প্যাকের প্রণালী দেওয়া হলো।
- মুলতানি মাটি এবং চন্দন পাউডার মিশিয়ে গোলাপ জল যোগ করুন এবং একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সাধারণ নির্দেশনা
মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় কিছু সাধারণ নিয়ম এবং পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনি সর্বোচ্চ উপকার পেতে পারেন। নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলি আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
- মুলতানি মাটি এবং জল বা গোলাপজল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- মুখে প্রয়োগ করুন এবং ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, সম্পূর্ণ শুকানোর আগেই মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- প্রয়োগের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যাতে ত্বক আর্দ্র থাকে।
- মুলতানি মাটির সাথে মেশানোর জন্য উপাদানগুলি আপনার ত্বকের ধরণের উপর নির্ভর করে নির্বাচন করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবুর রস ও গোলাপ জল, শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু ও দই, সংবেদনশীল ত্বকের জন্য চন্দন গুঁড়া ও গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন।
- মুলতানি মাটি ব্যবহার করার আগে আপনার মুখ ও গলা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বকের ময়লা ও তেল দূর করুন। এটি মুলতানি মাটিকে ত্বকের গভীরে কাজ করতে সাহায্য করবে।
সাবধানতা
মুলতানি মাটি ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে ত্বকের কোনো ক্ষতি না হয় এবং সঠিকভাবে উপকার পাওয়া যায়। নিম্নলিখিত সাবধানতাগুলি মেনে চলুন।
- অতিরিক্ত ব্যবহারঃ প্রতিদিন ব্যবহার ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ স্তরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
- প্রাথমিক পরীক্ষাঃ মুলতানি মাটি প্রথমবার ব্যবহার করার আগে হাতের একপাশে একটু প্রয়োগ করে দেখে নিন যেন কোনো অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া না হয়।
- প্যাচ টেস্টঃ প্রথমবার ব্যবহার করার আগে, হাতের একপাশে বা কানের পেছনে মুলতানি মাটির পেস্ট প্রয়োগ করে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। যদি কোনো রকম চুলকানি, লালচে ভাব বা অস্বস্তি দেখা দেয়, তাহলে মুলতানি মাটি ব্যবহার করবেন না।
- মৃদু উপাদান ব্যবহারঃ সংবেদনশীল ত্বকের জন্য মুলতানি মাটির সাথে মৃদু উপাদান যেমন গোলাপ জল বা দই ব্যবহার করুন। লেবুর রস বা অন্য কোনো অ্যাসিডিক উপাদান এড়িয়ে চলুন।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর ত্বক ময়েশ্চারাইজার দিয়ে হাইড্রেট করুন। এটি ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে।
- অঞ্চল নির্ধারণঃ মুলতানি মাটি প্যাক চোখ ও ঠোঁটের সংস্পর্শে আসতে দেবেন না। এই স্থানে ত্বক খুবই সংবেদনশীল।
- বিশুদ্ধ মুলতানি মাটিঃ ভালো মানের বিশুদ্ধ মুলতানি মাটি ব্যবহার করুন। বাজারে বিভিন্ন ধরণের মুলতানি মাটি পাওয়া যায়, তাই কিনতে গেলে সঠিক ব্র্যান্ড বা উৎস থেকে কিনুন।
প্রস্তাবনা
মুলতানি মাটি, যা ফুলারস আর্থ নামেও পরিচিত, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় প্রাকৃতিক উপাদান। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। মুলতানি মাটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কিছু কার্যকর ব্যবহার।
- তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করা ভাল।
- শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করা যথেষ্ট।
- মুলতানি মাটি ব্যবহারের পর একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত যাতে ত্বক আর্দ্র থাকে।
মুলতানি মাটি ও গোলাপ জলের ব্যবহার
মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল একসাথে ব্যবহার করা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। এই সংমিশ্রণটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে, ত্বককে শীতল করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল দিয়ে বিভিন্ন ফেস প্যাক তৈরি করা যায় যা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে পারে। নিচে ৪টি প্রণালী নিচে দেওয়া হলো।
১. সাধারণ মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল ফেস প্যাক
এক কাপ (ছোট) মুলতানি মাটি এবং দুই টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর প্যাক শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের জন্য বেশ উপকারী। ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বক নরম কোমল করে তোলে। শুষ্ক ত্বকের যত্নে, ত্বককে হাইড্রেট, নরম এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে গোলাপ জল।
উপাদান
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল
প্রণালী
- একটি পাত্রে মুলতানি মাটি নিন।
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।
- প্যাকটি মুখে ও গলায় লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন বা প্যাকটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
২. মুলতানি মাটি, গোলাপ জল ও লেবুর রস ফেস প্যাক
২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির গুঁড়ো, ৩ টেবিল চামচ গোলাপ জল, ১ চা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে বোতলে ভরে নিন, এবং এটি ফ্রিজে রাখুন। এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন কিছুক্ষণ। ২০ মিনিট রাখার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ বার এই পেস্ট ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
উপাদান
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল
প্রণালী
- মুলতানি মাটি ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল যোগ করে পেস্টটি মসৃণ করুন।
- প্যাকটি মুখে লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৩. মুলতানি মাটি, গোলাপ জল ও মধু ফেস প্যাক
১ চা চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে ১ চা চামচ মধু ও ১ চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। এই ফেসপ্যাক মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এরপর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। মুলতানি মাটি মুখ থেকে সমস্ত ময়লা পরিষ্কার করে দেয়। অন্যদিকে, মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে দেয়। এই ফেসপ্যাক আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে অনেক সাহায্য করে।
উপাদান
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- ১ টেবিল চামচ মধু
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল
প্রণালী
- মুলতানি মাটি ও মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- প্রয়োজন মতো গোলাপ জল যোগ করে পেস্টটি মসৃণ করুন।
- প্যাকটি মুখে লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৪. মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল দিয়ে টোনার
মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল দিয়ে টোনার। গোলাপ জল সবচেয়ে সুরক্ষিত প্রসাধনী পণ্য যা প্রতিদিন ব্যবহার করা যায়। মুখে প্রতিদিন গোলাপ জল লাগালে ত্বকের প্রদাহ, জ্বালাভাব, লালচে ভাব ইত্যাদি কমে যাবে। পাশাপাশি ত্বকের বার্ধক্যও সহজে আসবে না। গোলাপ জল প্রাকৃতিক উপাদান। তাই এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। রাতে টোনার হিসেবে গোলাপ জল মুখে ব্যবহার করতে পারেন। মুখে গোলাপ জল লাগিয়ে রেখে ঘুমালেও ত্বকে কোনও ক্ষতি হবে না।
উপাদান
- ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
- ১ কাপ গোলাপ জল
প্রণালী
- মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল একটি বোতলে মিশিয়ে নিন।
- প্রতিবার ব্যবহার করার আগে বোতলটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
- একটি তুলার প্যাডে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে মুখে মুছুন। এটি টোনার হিসেবে কাজ করবে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করবে।
অতিরিক্ত পরামর্শ
- সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাকগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
- প্যাক লাগানোর আগে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
- প্রতিবার ব্যবহার করার পর মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগান যাতে ত্বক শুষ্ক না হয়।
- মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক হবে আরও মসৃণ ও তাজা।
শীতকালে মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক
মুলতানি মাটি (ফুলার’স আর্থ) ত্বকের যত্নে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবে শুষ্ক ত্বকে এটি ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। শুষ্ক ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহার করার সঠিক পদ্ধতি।
মুলতানি মাটি এবং দুধঃ মুলতানি মাটি প্রায়শই ত্বকের তেল শোষণের জন্য পরিচিত। শুষ্ক ত্বকে এটি আরও শুষ্কতার সৃষ্টি করতে পারে, তাই মুলতানি মাটি দুধের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। দুধ ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং মুলতানি মাটির শুষ্কতা কমায়।
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- ২-৩ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- মুখে ও গলায় মিশ্রণটি প্রয়োগ করুন এবং ১৫-২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মুলতানি মাটি এবং মধুঃ মধু একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে শুষ্ক ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- ১ টেবিল চামচ মধু যোগ করুন।
- প্রয়োজনমত গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মুলতানি মাটি এবং অ্যাভোকাডোঃ অ্যাভোকাডো ত্বকের জন্য খুবই পুষ্টিকর। মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে এটি ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করতে পারে।
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- ১/২ পাকা অ্যাভোকাডো মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- এটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এছাড়াও, মুলতানি মাটি ব্যবহারের পরে সবসময় একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, যাতে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং শুষ্কতা কমে যায়। পাশাপাশি প্রদাহ দূর করে ত্বকের উপর আরাম প্রদান করে মুলতানি মাটি। মুলতানি মাটির মধ্যে শীতল প্রভাব রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই কার্যকর এবং নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
শীতকালে মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক
শীতের মরশুমে আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের যত্ন নেওয়াও জরুরি। ঠান্ডার দিনে ত্বক প্রাণহীন ও শুষ্ক হয়ে যায়। আসলে এই দিনগুলিতে ত্বক তার প্রাকৃতিক তেল হারিয়ে ফেলে তাই ত্বকের আরও যত্ন নেওয়া দরকার। জেনে নিন, এমন কিছু বেসন ফেসপ্যাক সম্পর্কে যা মুখে লাগালে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। বেসন ব্যবহার করে আপনি উজ্জ্বল ত্বক পেতে পারেন এবং ত্বকের দাগ দূর করতে পারেন।
মুলতানি মাটি ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করতে এবং অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। আপনি যদি তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে এই ফেসপ্যাকটি আপনার জন্য অনেক কাজে আসবে। মুলতানি মাটির সঙ্গে গোলাপ জল মিশে, এটি ত্বকের হাইড্রেশনের মাত্রা পূরণ করতে সাহায্য করে, এবং এটি আপনর ত্বককে একটি কুলিং ও সুদিং এফেক্ট ও দেয়।
প্রাচীনকাল থেকে হলুদের পাশাপাশি ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটি ব্যবহার হয়ে আসছে। মুলতানি মাটি ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় এটি বেশ ভাল পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের তেল, ময়লা, মৃত কোষ দূর করে।
শেষ মন্তব্য
মুলতানি মাটি একটি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ উপাদান যা সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারে। মুলতানি মাটি ত্বকের যত্নে একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক উপাদান। এটি ত্বক পরিষ্কার করা, ব্রণ প্রতিরোধ করা, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা এবং ত্বকের টোন সমান করার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে শুষ্ক ত্বক বা শীতকালে এটি ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নিয়মিত এবং সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে সহায়ক।
আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মুলতানি মাটি ও গোলাপ জলের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি। আজকের এই পোস্টি পড়ার পর আসা করি আপনাদের এই চন্দন ও মুলতানি মাটির ব্যবহার এবং মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে না জানা আর কিছু থাকতে পারে না। কেননা আমি মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সকল বিষয় বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি এবং আপনাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে মুলতানি মাটির উপকারিতার অনেক তথ্য দিয়েছি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url