ভিটামিন ডি কমলে কিভাবে বুঝবেন
আমাদের শরীরে ভিটামিন ডির বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া ভিটামিন ডির আরও কিছু উপকারিতা আছে।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া মানে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়া। এমনটি হওয়া মানেই আর্থাইটিসের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান এই ভিটামিন। এর অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি মৌলিকভাবে শিশুদের হাড় ও দাঁতের উন্নতি ও উন্নত উপদ্রব সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তবে এটি আরও অনেক পরিবারে প্রয়োজন হতে পারে। এটি ক্যালসিয়াম ও ফসফেট ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় এবং হাড়ে মিনারেলাইজেশন ও অস্থিকে পরিপূর্ণতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি ইমিউনিটি সিস্টেম কে সাহায্য করে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার বা সূর্যের আলোকে তৈরি হতে পারে, এবং তা মস্তিষ্কে স্থিতিশীলতা এবং মনোবল বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে, ভিটামিন ডি অতিরিক্ত অবশ্যই মেয়াদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন ডি কিছু অসুখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
যেহেতু সূর্যের আলো একটি প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি উৎস, প্রচুর সূর্যের আলো অপরিহার্যভাবে সাফেলা বা স্বস্তিত্ব সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই স্বাস্থ্যকর সূর্যের আলো পরিমাপে আপনার সংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি সাধারণত সূর্যের আলো, খাবার এবং সুপ্লিমেন্ট আকারে পাওয়া যায়। অনেক খাবারে ভিটামিন ডি অংশগ্রহণ করে যেমন মাছ, অর্থাৎ সালমন, টুনা, শীর্ষ, সার্ডিন, দুধ, অংকুরিত সবজি, কালোচানা, সামগে, গাজর, ব্রোকলি, মটর, গোলমরিচ ইত্যাদি।
ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার
ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ভিটামিনের অভাবে তাই হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এছাড়া ক্লান্তিবোধ, ক্ষুধামন্দা ও হতাশার কারণও হতে পারে ভিটামিন ডি ঘাটতি হলে। সূর্যের আলো থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি। সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দুইটার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রোদ পোহালে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
অনেক গবেষকের মতে, শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকলে করোনাভাইরাস শরীরে বেশি ক্ষতি করে। এ জন্য ভিটামিন ডি গ্রহণের উপর জোর দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি আহরণ করা সম্ভব তবে সেটির পরিমাণ খুবই কম। একারণে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
- মাছঃ মাছ ভিটামিন ডি একটি বৃহত্তর উৎস। সালমন, টুনা, শীর্ষ, সার্ডিন ইত্যাদি বিশেষভাবে ভিটামিন ডি ধারণ করে।
- দুধ ও ডেয়ারি প্রোডাক্টঃ দুধ, দই, চিজ, লাস্যাং, ঘী ইত্যাদি দেশী ডেয়ারি প্রোডাক্ট ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের একটি মূল উৎস।
- অংকুরিত সবজিঃ কালোচানা, সামগে, গাজর, ব্রোকলি, মটর ইত্যাদি অংকুরিত সবজির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
- অন্যান্য খাবারঃ মাশরুম, কোকোনাট ওয়াটার, সূর্যমুখী তেল, আলুগোছা, ফসফেটড মিল্ক, ওয়াটারক্রেস, স্যার্ডিন ইত্যাদি অন্যান্য খাবার গুলোতে ও কিছু ধরনের মুষ্টির তেলে প্রাণীর পরিমাণ খোঁজা যায়।
ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি
ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজির মধ্যে একটি অত্যন্ত ভালো উদাহরণ হলো স্পিনাচ। স্পিনাচ ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে এবং গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যগত উপকার করতে পারে। অতিরিক্ত স্পিনাচ খাওয়া গর্ভাবস্থায় শিশুর হাড়, দাঁত এবং মাংসপেশীসমূহের উন্নতির জন্য ভিটামিন ডি সরবরাহ করতে সহায়ক হতে পারে।
আরও কিছু ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো কেললিপাতা, কলিফ্লাওয়ার, মোরিংগা পাতা ইত্যাদি। এই সবজির সর্বোত্তম উপভোগ করার জন্য তাদের ভারপ্রাপ্ত অংশ শীতল ও আচরণ অবস্থায় শুধুমাত্র মাঝারি আচরণ করা উচিত হতে পারে।
- স্পিনাচঃ স্পিনাচ একটি প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি উৎস। প্রতি 100 গ্রাম স্পিনাচে প্রায় 9% ভিটামিন ডি থাকে।
- কেলকালঃ কেলকাল হলো আরেকটি প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি উৎস। প্রতি 100 গ্রাম কেলকালে প্রায় 10% ভিটামিন ডি থাকে।
- মাশরুমঃ মাশরুম একটি অন্য ভিটামিন ডি উৎস। যদিও এটি স্বাভাবিক রূপে ভিটামিন ডি যুক্ত নয়, কিছু প্রকারের মাশরুম সাধারণ আলো অথবা উভয় দিকে আরোপী উষ্ণ আলোর অধীনে প্রস্তুত করা হয়, যা ভিটামিন ডি উৎস হিসাবে কাজ করে।
- ব্রোকলিঃ ব্রোকলি একটি অন্য ভিটামিন ডি উৎস। প্রতি 100 গ্রাম ব্রোকলিতে প্রায় 13% ভিটামিন ডি থাকে।
- গাজরঃ গাজর একটি অন্য ভিটামিন ডি উৎস হিসাবে পরিচিত। প্রতি 100 গ্রাম গাজরে প্রায় 3% ভিটামিন ডি থাকে।
এই সবগুলি শাকসবজি নিয়ে মেজে তৈরি করা বা ভাতের সাথে সংমিশ্রণ করা যেতে পারে। এছাড়াও, কিছু ফল এবং খাদ্য পণ্যেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তবে, বিশেষত শাকসবজি প্রাকৃতিক এবং সহজলভ্য ভিটামিন ডি উৎস। ধর্মীয় পরামর্শের জন্য আপনি আপনার চিকিত্সকে পরামর্শ করতে পারেন ভিটামিন ডি উৎস হিসাবে কোন শাকসবজি খাবেন।
ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন ডির অভাবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন ডির ঘাটতি হলে শরীর ক্লান্ত লাগে বেশি এবং অবসাদগ্রস্ত লাগে। অস্টিওপরোসিস, বিষণ্ণতা, জরায়ু ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এমনকি ডায়াবেটিস এবং মেদবৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডির ভূমিকা আছে। অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না যে তারা ভিটামিন ডির অভাবে ভুগছেন।
ভিটামিন ডি সানসাইন ভিটামিন নামেও পরিচিত। শরীর সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলেই শরীরে ভিটামিন ডি’র যোগান মেলে। যদিও কিছু খাবার থেকে এটি পাওয়া যায়, তবে এই ভিটামিনের প্রধান উৎস হলো সূর্য। ভিটামিন ডি অভাবের ফলাফল বিভিন্ন প্রকারের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যার জন্ম দেয় যেমন:
- রিকেটস (Rickets): এটি প্রাথমিকভাবে শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তবে এটি বয়স বৃদ্ধ ও যৌবনের মানুষেরও ঘটতে পারে। এটি অসংখ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, তবে ভিটামিন ডি অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এটের ফলে হয়ে যায় অস্বাভাবিক হাড়ের নিশ্চুত বা ব্যান্ডের গঠন, যা মাথা, পা, হাত ইত্যাদি যেকোনো অংশে দেখা যেতে পারে।
- অস্থিমজ্জা দুর্বলতা (Osteomalacia): এটি প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধ ও যৌবনের মানুষের মধ্যে দেখা যায়। এটি হাড়ের নিচের অংশে নিখুঁত ও নরম হাড় উৎপন্ন করে এবং অস্থি সংক্রান্ত অস্থিমজ্জা অবস্থানের নির্দেশ করে।
- অস্থিপোরোসিস (Osteoporosis): এটি হাড়ের নমনীয়তা বা দ্রবতা হ্রাসের ফলে হয়। এটি বৃদ্ধ ও যৌবনের মানুষের মধ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়।
- মাসিক সমস্যা: ভিটামিন ডি অভাবের আরো একটি ফলাফল হতে পারে মহিলাদের মাসিক সমস্যা।
- অন্যান্য সমস্যা: অন্যান্য সমস্যার মধ্যে হতে পারে মানসিক অবস্থার সমস্যা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যা।
ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণগুলি অনেকটা সাধারণ হতে পারে এবং বহুল ক্ষেত্রে সমস্যার চিহ্নিত হওয়া একটি সময় সম্পর্কে না বুঝতে পারেন। একে প্রতিরোধ করতে এবং স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যার মূল কারণ সনাক্ত করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে ভিটামিন ডি সম্পর্কিত সমস্যার প্রতিরোধ করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার প্রবণতা এবং সঠিক নির্দেশিকা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি
মানুষের শরীর মূলত পেশির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকে। আর এই পেশির সুরক্ষা নিশ্চিত করে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু অনেকেই জানেন না, কোন কোন খাবারে ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই আজকের আয়োজনে থাকছে ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ ও এমন কিছু খাবারের নাম, যেগুলো দ্রুত শরীরের ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণে সবচেয়ে সহজ আর দ্রুত কাজ করে সূর্যস্নান। নিয়মিত বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ১৫ মিনিট সূর্যস্নান করা গেলে শরীরের ৭০ ভাগ ভিটামিন ডি-র চাহিদাই পূরণ হয়ে যায়।তবে শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি পূরণে খাবারের প্রয়োজনীয়তাও কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিটামিন ডি-র ঘাটতিতে শরীরে নানা উপসর্গ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ভিটামিন ডি অনেক ধরণের খাবারে পাওয়া যায়, তবে কিছু প্রাথমিক খাবারে ভিটামিন ডি বেশি পরিমাণে রয়েছে। নিম্নলিখিত খাবারে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
- মাছঃ মাছ ভিটামিন ডি একটি উত্তম উৎস। ভিটামিন ডি বিশেষত চর্চিত মাছ ধরনের যেমন সালমন, সার্ডিন, ম্যাকারেল, টুনা, হিলটন এবং শিল্লিং।
- দুধ এবং ডেয়িরি পণ্যঃ দুধ, দই, চানাচুর, চীজ, গরুর দুধ, মাংস প্রস্তুতির পণ্য ইত্যাদি সব ভিটামিন ডি উত্তম উৎস।
- সারা ডাইরিঃ যখন দুধ অথবা ডেয়িরি পণ্যে সারা গাই বা গরুর পোস্টাসিয়াম থাকে তখন তাদের ভিটামিন ডি পরিমাণ বাড়ে।
- সূর্যের আলোঃ সূর্যের আলো একটি প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি উৎপাদক। সুস্থ মানুষ যেকোনো সময়ে সূর্যের আলোতে সময় কাটাতে পারেন যাতে তারা সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারেন।
- ভিটামিন ডি সম্পর্কিত প্রযুক্ত খাদ্য: কিছু খাবার ভিটামিন ডি সম্পর্কিত প্রযুক্ত ভিটামিন ডি যোগান করা হয়, যেমন অর্যান্ট মার্গারিন, সারা গ্রেইন সিরিয়াল, যতিকে দুধ, ইত্যাদি।
এই খাবার পদার্থগুলি আপনাকে ভিটামিন ডি প্রয়োজন পরিমাণ প্রদান করতে পারে। এছাড়াও, অনেক সম্প্রতি তৈরি খাবারে ভিটামিন ডি যোগ করা হয়েছে, যা সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা যায়: কিছু খাবারে ভিটামিন ডি নির্ভর অথবা প্রযুক্ত ভিটামিন ডি সম্পর্কিত খাদ্য। এগুলি আপনাকে সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ডি প্রয়োজন প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে।
ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়
শরীরে এর ঘাটতি পূরণ করতে হলে প্রথমেই জানতে হবে ভিটামিন ডি-এর উৎস কী কী? তাই এই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে হলে মাশরুম, ডিম, কমলার রস, পনির, চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, টুনা এবং ম্যাকেরেল, দুগ্ধজাত খাবার যেমন দই, দুধ, সিরিয়াল, সয়া জুস ইত্যাদি খান।
ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। মানসিক সুস্থতার জন্যও এটি খুবই জরুরি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। কাজ হচ্ছে ইনটিসটাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না।
- ডাক্তারের পরামর্শঃ যদি আপনি ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ অনুভব করেন বা আপনার চিকিৎসক এটি পরীক্ষা করার সুপারিশ করেন, তাহলে ডাক্তারের সাথে আলাপ করা উচিত। তারা আপনার লক্ষণ এবং অবস্থান নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা করে ভিটামিন ডি অভাব নিশ্চিত করতে পারেন।
- ভিটামিন ডি প্রয়োজনঃ আপনি যদি ভিটামিন ডি অভাব সংক্রান্ত পরীক্ষা প্রাপ্ত করেন তাহলে ডাক্তার আপনাকে মৌলিক পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
- পূরক পুষ্টিকর খাবারঃ ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিতে না চাইলে, আপনি প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন মাছ, ডেয়িরি পণ্য, অর্যান্ট মার্গারিন ইত্যাদি যোগাযোগ করতে পারেন।
- সূর্যের আলোঃ নিয়মিতভাবে সূর্যের আলোর সাথে সময় কাটানো ভিটামিন ডি প্রাপ্তির একটি প্রাকৃতিক উপায়। তবে, সূর্যের আলো এবং অনুবর্তী রোগ জনিত ঝুঁকিগুলির সাথে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
- পর্যাপ্ত আলোচনা ও সহায়তাঃ আপনি যদি ভিটামিন ডি অভাব সম্পর্কে সন্দেহজনক অবস্থা সম্মুখীন হন, তবে ডাক্তারের সাথে পর্যাপ্ত আলোচনা ও সাহায্য করা উচিত।
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম দুটি পরস্পরের সম্প্রতি সংযোগকারী নামক সংযুক্ত পুষ্টিতত্ত্বের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাৎসরিক সংযোজন। এই দুটি পুষ্টিতত্ত্বের পরিবেশায়নে বেশিরভাগ মানুষের জন্য ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের মধ্যে সম্পর্কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এর অভাবে ঘটার কিছু সাধারণ লক্ষণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- অস্থিপোরোসিস (Osteoporosis): ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাব এই অস্থিপোরোসিস নামক অবস্থা উত্পন্ন করতে পারে, যা অস্থির হতে পারে। এটি খাঁটি, প্রবাহী অথবা অস্থিপূর্ণ অস্থি উৎপন্ন করতে পারে এবং ভাঙ্গার সম্পর্কে ঝুঁকিতে আপনাকে প্রবণতা করতে পারে।
- রিকেটস (Rickets): এটি খুব খারাপ অস্থি পরিবর্তনের সাথে একটি গুরুতর অস্থি অস্থি অস্থির পরিবর্তনের সাথে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যা বাচ্চাদের মধ্যে খুব সাধারণ হয়।
- মাস্তিসঃ মাস্তিস হলো স্তনের মধ্যে স্তনের সংক্রান্ত একটি সমস্যা যা আপনার স্তনের ব্রেস্টস স্থানে একটি অবস্থা করতে পারে, যাতে স্তনের পরিমাপের অবন্তরণ হতে পারে।
- মস্তিতিসঃ মস্তিতিস হলো স্তনের একটি অন্য সমস্যা, যা আপনার স্তনের একটি অংশে সংক্রান্ত হতে পারে, যা একটি অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে যা আপনার স্তনের ব্রেস্টস স্থানে অস্বাভাবিক অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
- হাইপারক্যালসিমিয়া: যদি আপনি অনেক ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করেন তবে আপনি হাইপারক্যালসিমিয়া অবস্থা প্রাপ্ত করতে পারেন, যা আপনার অস্বাভাবিক প্রদর্শন করতে পারে।
কোন সময়ের রোদে ভিটামিন ডি থাকে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যের রোদ ভিটামিন ডির খুব ভালো উৎস। অর্থাৎ, বাইরে বের হয়ে যখন দেখবেন আপনার ছায়া আপনার তুলনায় ছোট, সেই সময়ের রোদে আপনার ত্বক সবচেয়ে ভালো ভিটামিন ডি উৎপন্ন করতে পারে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মিড ডে-র পরে রোদে যাওয়া আরও বেশি ক্ষতিকর।
ভিটামিন ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে৷ সেক্ষেত্রে পোশাক বা সানস্ক্রিন সরাসরি ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে বাধা দেয়। তাই মুখে সানস্ক্রিন মেখে বের হলেও হাত-পা বা শরীরের অন্য কোনো স্থান যেন উন্মুক্ত থাকে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে৷ মাঝেমধ্যে সানস্ক্রিন ছাড়াই রোদে বের হতে চেষ্টা করুন।
তবে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষের গায়ের রং শ্যামবর্ণের হয়। এটি ভিটামিন ডি শরীরে শোষণ হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বাধা। কারণ শ্যামবর্ণের ত্বকে মেলানিন নামক রঞ্জক পদার্থ বেশি থাকে৷ মেলানিন অতি বেগুনি রশ্মিকে বাধা দেয়। যাদের গায়ের রং উজ্জ্বল তাদের প্রতিদিন ২০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকলেই চলে।
রোদে যাব, নাকি যাব না? ঘরে থেকে এমন চিন্তা কমবেশি সবার মনেই আসে। যার কারণও আছে। এই যেমন রোদের ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে, ত্বক পোড়া, ঘাম হওয়া প্রভৃতি। তবে রোদ ত্বকের দারুণ উপকারে আসে। ভিটামিন ডি তৈরি করে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে তা দিয়ে তৈরি হয় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। তাই তো ভিটামিন ডি-কে বলা হয় ‘সানশাইন ভিটামিন।
দুপুরের ঠিক আগমুহূর্তে রোদে যাওয়ার সঠিক সময়। কারণ এই সময়ে সূর্যের তাপ বেশি থাকে। তাই অল্প সময়েই আপনি পেয়ে যাবে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি। বিভিন্ন গবেষণা বলে, এই সময়টাতে ভিটামিন ডি নেওয়ার জন্য শরীর সব থেকে বেশি উপযোগী থাকে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মিড ডে-র পরে রোদে যাওয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। এতে স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়
ভিটামিন ডির অভাবে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন ডির ঘাটতি হলে শরীর ক্লান্ত লাগে বেশি এবং অবসাদগ্রস্ত লাগে। অস্টিওপরোসিস, বিষণ্ণতা, জরায়ু ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার এমনকি ডায়াবেটিস এবং মেদবৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডির ভূমিকা আছে। অনেকেই আছেন যারা নিজেরাও জানেন না যে তারা ভিটামিন ডির অভাবে ভুগছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিটামিন ডি আসলে একটি স্টেরয়েড হরমোন যা শরীরে প্রোটিন তৈরিতে নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকায় থাকে এবং এর ঘাটতি হলে শিশু থেকে বয়স্ক - সবারই নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।শরীরে এর ঘাটতি হলে শিশুদের রিকেট রোগ হয় অর্থাৎ পা বেঁকে যেতে পারে, মাথার খুলি বড় হয়ে যেতে পারে।
বেশিদিন এই রোগে ভুগলে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিও ব্যাহত হতে পারে।
আবার বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাড়ক্ষয় কিংবা ব্যথাসহ নানা সমস্যা তৈরি হয় ভিটামিন ডি-র অভাব থেকেই।
একই সাথে বেড়ে যায় দৈহিক ওজন কিংবা প্রয়োজনীয় ওজন না হওয়ার সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
এসব কারণেই এ ধরণের লক্ষণ দেখা দিলে রক্তে ভিটামিন ডি-র মাত্রা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
- অস্থিপোরোসিস (Osteoporosis): ভিটামিন ডি অভাবের সাথে একটি সম্পর্ক সাধারণত সংক্রান্ত। এটি অস্থি সংক্রান্ত একটি অবস্থা যেখানে অস্থির অবস্থান হ্রাস হয়।
- রিকেটস (Rickets): এটি মূলত শিশুদের মধ্যে দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেও এটি দেখা যেতে পারে, যারা যথার্থ অথবা অপর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন।
- মাস্তিতিস: এটি স্তনের একটি অস্বাভাবিক সংক্রান্ত একটি অবস্থা যা ভিটামিন ডি অভাবের একটি লক্ষণ হতে পারে।
- স্থূলতা বৃদ্ধি: কিছু গবেষণা ভিটামিন ডি অভাবের সাথে অপরিমিত শরীরের ওজন এবং অনিয়ামক আকারের সম্পর্ক রয়েছে।
- ক্যান্সার: কিছু গবেষণা ভিটামিন ডি অভাবের একটি সংবেদনশীল অবস্থার সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক বিশেষত প্রস্তুত করেছে।
ভিটামিন ডি এর প্রাকৃতিক উৎস কোনটি
চর্বিযুক্ত মাছ এবং মাংস জাতীয় কয়েকটি খাবারে স্বাভাবিকভাবেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে গরুর দুধ এবং উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত দুধে ভিটামিন ডি যোগ করে শক্তি বাড়ানো হয়। যেমন অনেক প্রাতঃরাশের শস্য। অতিবেগুনি আলোর সংস্পর্শে আসা মাশরুম ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস।
ভিটামিন ডি পেতে হলে অবশ্যই ত্বকে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাতে হবে৷ সেক্ষেত্রে পোশাক বা সানস্ক্রিন সরাসরি ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরিতে বাধা দেয়। তাই মুখে সানস্ক্রিন মেখে বের হলেও হাত-পা বা শরীরের অন্য কোনো স্থান যেন উন্মুক্ত থাকে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে৷ মাঝেমধ্যে সানস্ক্রিন ছাড়াই রোদে বের হতে চেষ্টা করুন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা অনেক। বিশেষ করে শীতের সময় ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুব জরুরি। তার উপর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতেও ভিটামিন ডি কার্যকর বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভিটামিনের ঘাটতির কারণে শীতে হাড়ের সমস্যা ও ফ্লু এর সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস সূর্যালোক। এছাড়া এই ভিটামিন মেলে এমন কিছু খাবারও রাখতে পারেন পাতে।
- সূর্যের আলোঃ সূর্যের আলো হ'ল ভিটামিন ডি এর একটি প্রাকৃতিক উৎস। যখন আমরা সূর্যের আলোর কাছাকাছি বিশেষত সকালের সময়ে থাকি, তখন আমাদের ত্বকের ভেতরে প্রতিষ্ঠিত হয় ভিটামিন ডি।
- মাছঃ অনেক প্রকারের মাছ, বিশেষত তাজা ওয়ালের প্রাণী মাছ, ভিটামিন ডি এর একটি ভাল উৎস। মাছের তেলে ভিটামিন ডি রয়েছে যা মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি হিসেবে প্রবেশ করে।
- ডেয়িরি পণ্যঃ কিছু ডেয়িরি পণ্য এবং দুধ পণ্য সাধারণত ভিটামিন ডি সংযুক্ত হয়। তাদের সাথে ভিটামিন ডি প্রাপ্তি করা সম্ভব।
- অর্যান্ট মার্গারিনঃ কিছু অর্যান্ট মার্গারিন পণ্য সাধারণত ভিটামিন ডি যুক্ত হয় যা একটি উত্তেজনা হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
- অ্যাভোকাডোঃ অ্যাভোকাডো বা মাক্সিকান হাস্তি একটি ভাল ভিটামিন ডি উৎস হতে পারে।
এই প্রাকৃতিক উৎসগুলি সাধারণত ভিটামিন ডি প্রদান করে এবং স্বাভাবিক পরিমাণে সেটি আমাদের প্রয়োজনীয় মাত্রা প্রদান করতে পারে। তবে, কিছু উদাহরণে প্রকৃতিতে সংক্রান্ত বিভিন্ন অমিল সম্পন্ন খাবার আছে, যা ভিটামিন ডি এর সুপারিশ করা যেতে পারে।
শেষ মন্তব্য
ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টিযুক্ত উপাদান, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবে সূর্যের আলো, মাছ, ডেয়িরি পণ্য এবং অ্যাভোকাডো এমন প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন ডি প্রাপ্ত করা যায়। এই ভিটামিন আমাদের অস্থিবাহীতা, মস্তিষ্ক সুস্থতা, হৃদরোগ এবং অস্থিমজ্জার সুস্থতা বজায় রাখে।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে, যে কারণে সম্প্রতি তাদের খাদ্যে পরিমাণগত অভাব পূরণের জন্য সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে আপনার চিকিত্সকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত যাতে আপনি আপনার পুষ্টি প্রদানের জন্য সঠিক পরামর্শ পান। ধরণ ধরণের খাদ্য উৎপাদনের সাথে সাথে ভিটামিন ডি প্রাপ্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সমর্থন করতে না পেরে কোনও সময়ে সাপ্লিমেন্ট একটি পর্যাপ্ত বিকল্প হতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url