খালি পেটে পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারি রয়েছে একাধিক গুনাগু। এই পাতায় কিন্তু বহু জটিল অসুখের থেকে আপনাকে সুরক্ষা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছে আমাদের হাতের কাছে প্রকৃতি অনেক সমস্যা সমাধান দিয়ে রেখেছে। শুধু সঠিক জিনিসটা কে চিনে ফেলার দেরি। এই যেমন পেয়ারা পাতার কথাই ধরুন না। পেয়ারা পাতা আপনাকে নানাভাবে উপকৃত করতে পারে। এবং কি কি রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়? খাবেন বা কিভাবে। উত্তর রইল এই আর্টিকেলটিতে।
খালি পেটে পেয়ারার পাতা চিবিয়ে খেলে হজমশক্তি ভালো হয়। এতে পেটের সমস্যা যেমন বদহজম, পোস্টপাঠিন্য, কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটির সম্ভাবনা কমে। তাই প্রতিদিন সকালে পেয়ারার পাতা চিবিয়ে খেতে হবে। ওজন কমাতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে পিয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলে পেটের পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারা পাতা খাওয়ার উপকারিতা যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং অনেক রোগপ্রতিরোধ করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ প্রতিদিন পেয়ারা পাতা খেলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ থাকে। এটি উপস্থিত ফেনোলিক রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে ফলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।
অনেকেই নিশ্চয়ই জানেন যে পেয়ারা আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী। পেয়ারা শুধু ফল হিসেবে নয় পেয়ারা পাতা নানাভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের উপকার করে থাকে। অনেকেরই জানেন না পেয়ারার পাতাও সমানভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে থাকে। পেয়ারার গাছের পাতা কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি, এবং হজম সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে নেমেষে।
পিয়ারা এমন একটি ফল যা আপেলের চেয়েও বেশি পুষ্টিগুণী ভরপুর, এমনই মনে হয় করা যায় মনে করা যায় পেয়ারাই যে শুধু শরীরের উপকারে এমনটা নয়, এই গাছের পাতা কম যায় না। পেয়ারা পাতা পানিতে সিদ্ধ করে পান করলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই পানি হজমশক্তি উন্নতি ঘটায় এবং বদহজমের সমস্যা কমায়। পেয়ারা পাতায় পটাশিয়াম পাওয়া যায় যা আমাদের হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই পাতায় পেট ফোলা, জ্বর, মাথাব্যথা, এবং গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।
পেয়ারা পাতা খাওয়ার অপকারিতা
পেয়ারা পাতা খাওয়ার অপকারিতা পেয়ারার পাতা রক্তাল্পতা, মাথাব্যথা, এবং কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে। পেয়ার বেশি খেলে পেটের রোগও হতে পারে। একে আপনার হজম সিস্টেম খারাপ প্রভাব ফেলে। এবং হজম শক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। বেশি পরিমাণ পেয়ারা খেলে পেট ফাঁপা হতে পারে এবং পেটে ব্যাথা করতে পারে।
প্রত্যেক ফলেরই কিছু না কিছু অপকারিতা রয়েছে। তেমনি পেয়ারার রয়েছে। যেকোনো কিছু মাএাতিরিক্ত খেলে তার কিছু সমস্যা থাকবে। পেয়ারা কয়েকটি উপকারিতা দেখে নিই।
সুগার বৃদ্ধিঃ অধিক পেয়ারা খেলে আপনার ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর পাশাপাশি এটিতে কোন প্রোটিন এবং ফ্যাট না থাকায় আপনি পেট ভরে পেয়ারা খেলেও একটু পর দেখবেন আপনার আবার ক্ষুধা পেয়ে যাচ্ছে। কারণ শরীরের প্রোটিনের অভাব থেকেই যায়। এজন্য পেয়ারা অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না।
ব্যাক্টেরিয়াঃ অন্যান্য যে কোন ফলের মতো পেয়ারা তো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয়। বিশেষ করে যদি পেয়ারা চামড়া ফাটা বা ক্ষতিগ্রস্ত থাকে তবে ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হওয়া সম্ভাবনা বেশি। তাই পিয়ারা উপরের চামড়া ফেলে দিয়ে খাওয়া উচিত, তাহলে ব্যাকটেরিয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন। তাই জন্য পেয়ারা উপর কোনো ক্ষত বা কাটা দাগ থাকলে পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়।
ডাইরিয়া এবং পেটের পীড়াঃ উচ্চমাত্রায় ফ্রুরুক্টজ হজম করতে না পারার কারণে অনেক সময় ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথা হতে পারে। আর পেয়ারার ভেতরেও অধিকাংশ বীজ থাকে। এ অংশটি আমাদেরকে পেটে কখনো ঠিকমতো হজম হয় না। তাই অধিক পেয়ারা খেলে পেটে ব্যথা এবং পেট খারাপ হওয়া সম্ভবনা থাকে।
পেয়ারার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
পেয়ারার পুষ্টিগুণ পেয়ারা সারা বছর পাওয়া যায় এমন একটি উপকারিতা ফল পেয়ারা। দেশীয় এই ফল দামের সস্তা ও সহজলভ্য। অন্যান্য ফলে তুলনায় পেয়ারা পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যা আমলকি ছাড়া অন্য যে কোন ফলে পাওয়া যায় না। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পেয়ারায় রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
পুষ্টিগুণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারা ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ, বিশেষ করে ভিটামিন সি রয়েছে।একটি পেয়ারায় রয়েছে ৪টি আপেলের ও ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ পানি খাযইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম , প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। পেয়ারা ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। এতে ২১১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি মুখগহ্বর, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে।
সাধারণ ফলে ভিটামিন এ সরাসরি পাওয়া যায় না। এটি প্রথমে ক্যারোটির রুপে থাকে, পরবর্তী সময় তা ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ক্যারোটিন শরীরে স্বাভাবিক বৃদ্ধির নিশ্চিত করে। চোখের রেটিনা ও কোষে সুস্থতা বজায় রাখতে এটি সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারা ০.২১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ১ ও ০.০৯ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারার ৭৬ কিলোক্যালরি খাদ্য শক্তি, ১.৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে ও ১.১ গ্রাম স্নেহ, ও ১৫.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রোজেন পাওয়া যায়। পেয়ারা নানা রকম খনিজ উপাদানে ভরপুর। প্রতি ১০০গ্রাম পেরায় ০.৬ গ্রাম মিনারেল, ০.০৩ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৩ রিবোফ্লোভিন, ১.৪ মিলিগ্রাম আইরন, ২৮ মিলিগ্রাম ফার্স্ট পারাস ফসফরাস ও ২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধঃ ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খুব কাজ পেয়ারা। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়বেটিস মেলিটাসের এর চিকিৎসায় খুব কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ পেয়ারা পাতাও কার্যকারী উপাদান তাই ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে হলে পিয়ারা ও পেয়ারার পাতা বেশি কার্যকরী একটি উপাদান।
রোগপ্রতিরোধেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফলমূলের জুড়ি নেই। তাই ফল হতে পারে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উন্নতম সহজ উপায়।হাতের নাগালে আর সুলভ মূল্যে হওয়া খুব সহজে খাবার তালিকা রাখা যায় পেয়ারা। আর এসব ফলের মধ্যে পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ পেয়ারা অন্যতম।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ বিজ্ঞানীরা বলেছে পেয়ারার পাতার রস ও ফলের মতো সমান উপকারী। পেয়ারা রস প্রজেক্ট টিউমারের আঁকার ছোট করে এবং প্রজেক্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া নিয়মিতভাবে পেয়ারা খেলে বিভিন্ন ক্যান্সার ধরনের যেমন স্তন, মুখের, ত্বকের, পাকস্থলীর এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়তা করে।
রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়
সহজলভ্য ও পুষ্টিকর ফল পেয়ারা। এতে থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান শরীরে নানা কাজে লাগে। পেয়ারায় থাকে পর্যাপ্ত ফাইবার যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। তবে এই উপকারের উপাদানের রাতে বেলা ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ রাতে পেয়ারা খেলে তা বদহজম কারণ হতে পারে। এটি খাওয়ার কারণে পেট ফেঁপে যেতে পারে এবং ঘুম সঠিকভাবে হয় না।
তবে রাতে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো। ফাইবার থাকলেও কারো কারো পেয়ারা খেয়ে গ্যাস হয়। পেয়ারা খেয়ে অনেকেই পেট ফাঁপা সমস্যা ভোগেন। তাই দিনের বেলা হাটা চলার সময় পেয়ারা খাওয়া ভালো হলেও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাওয়া সঠিক নয়।
পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময়
এটি আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খুব সহায়ক, তাই আপনার প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া উচিত। এতে অনেক ভিটামিন পাওয়া যায় আপনার বস্তিতে শক্তিশালী করতে খুবই সহায়ক। এটি সঠিক রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখতে খুব সহায়ক। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে একটি করে পেয়ারা খাওয়া উচিত যাতে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে।
ফল দেখে জিভে জল আসে, এমন মানুষের সংখ্যা নিহাত কম নয়। পেয়ারা, আম, কাঁঠাল, বরই, আমলকি ইত্যাদি মৌসুমীর ফল রয়েছে। এতে থাকা মিনারেল, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এসব উপাদান যেমন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তেমনি ত্বক ভালো রাখে তরুণ্য ধরে রাখতে কাজ করে এই গুলো ফল।
পেয়ারা কাদের খাওয়া উচিত নয়
গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মহিলাদের এটি বেশি খাওয়া উচিত নয়। এর অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে ফাইবার বাড়ে যা হজম সমস্যা সৃষ্টি করে। আপনি যদি অন্য কোন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে পেয়ারা এড়িয়ে চলুন। এর মধ্যে পটাশিয়াম এবং ফাইবার থাকে, আপনি ডায়েট অন্তর্ভুক্ত করার আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে পেয়ারা খেতে পারেন।
গরমের নানা রকম ফলের মধ্যে পেয়ারা অন্যতম। চিলেকোঠার ঘরে গ্রীষ্মের দুপুরবেলা অল্প একটু নুন আর লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মাখা পেয়ারা খেতে কার না ভালো লাগে। পেয়ারার পুষ্টিগুণের কথা অনেকেই জানেন। পেয়ারা পাতার গুণ কম নয়। গবেষণা দেখা গিয়েছে পেয়ারা পাতার নির্যাস হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে হজম শক্তি উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তলে। আসলে পিয়াড়ায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে।এ ছাড়া, এমন কিছু সমস্যা রয়েছে যা থাকলে পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়।
কোন কোন সমস্যায় পেয়ারা এড়িয়ে চলবে
পেটের সমস্যাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পেয়ারা খেলে উপকার মিলে, কিন্তু অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে পেট ফাঁপা বা হজম সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। পেয়ারায় থাকা অতিরিক্ত সুপ্ত ফ্রুক্টোজ রক্ত শোষণ করছে না পারলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।
সর্দি-কাশিতে ভুগলেঃ পেয়ারায় পানি পরিমাপ অনেকটাই বেশি। তাই ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে তাদের জন্য পিয়ারা সমস্যা কারণ হতে পারে। তবে সকালে খাবার খাওয়ার পর পিয়ারা খেলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও এড়ানো যাই। কিন্তু দুপুর বা বিকালে পর পেয়ারা খাওয়া চলবে না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url